প্রবেশন এন্ড আফটার কেয়ার সার্ভিস
সাধারণত অপরাধ বলতে আইন দ্বারা নিষিদ্ধ ও দন্ডনীয় কাজকে বোঝায়। অর্থাৎ রাষ্ট্র কর্তৃক প্রণীত ও বলবৎকৃত আইনের পরিপন্থী এবং দন্ডনীয় যে কোন কাজই অপরাধ। এটি একটি সামাজিক ব্যাধি। কখনও মন্দ পরিবেশ-পরিস্থিতি ও অসৎ সঙ্গের প্রভাবে, কখনও অজ্ঞানতার বশবর্তী হয়ে, আবার কখনও সজ্ঞানে অপরাধের সাথে মানুষ জড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি সভ্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি প্রদানের বিধান রয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শাস্তি অপরাধ প্রতিরোধে সহায়ক না হয়ে অপরাধ বিস্তারে সহায়ক হয়। অপরাধের দায়ে কোন অপরাধীকে যখন কোন কারাগারে প্রেরণ করা হয়, কারাগারে থাকাকালীন সময়ে সে অন্যান্য দাগী অপরাধীদের সংস্পর্শে এসে মারাত্মক ধরনের অপরাধের অভিজ্ঞতা ও ক্ষতিকর শিক্ষা লাভ করে থাকে। অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও আধুনিক চিন্তাবিদগণ অপরাধ সংশোধনের ক্ষেত্রে একজন অপরাধীর শাস্তিদান ব্যবস্থার পরিবর্তে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা অর্থাৎ শাস্তির পরিবর্তে প্রাথমিক ব্যবস্থা হিসেবে তার নিজ পরিবেশে অর্থাৎ সমাজে রেখেই সংশোধন ও পুনবার্সনমূলক ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেছেন। ১৯৬০ সালে “দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স” জারীর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ‘প্রবেশন এন্ড আফটার কেয়ার কার্যক্রম’ অন্যতম। ১৯৬০ সালে ‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স’ জারী এবং ১৯৬২ সালে ২য় পাঁচশালা পরিকল্পনাধীন সংশোধনমূলক এ কার্যক্রম চালু হয় এবং ২টি উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। যথা- (১) প্রবেশন অব অফেন্ডার্স প্রকল্প এবং (২) আফটার কেয়ার সার্ভিসেস। বর্তমানে ৬টি সিএমএম কোর্টসহ ৬৪টি জেলায় সর্বমোট ৭০টি ইউনিটে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ কার্যক্রমের আওতায় প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৬০ (এ্যাক্ট ১৯৬৪) ছাড়াও বর্তমানে শিশু আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) এবং কারাগারে আটক সাজাপ্রাপ্ত নারীদের বিশেষ সুবিধা আইন, ২০০৬ ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা বাস্তবায়িত হচ্ছে। জেলাপর্যায়ে ৭০ জন প্রবেশন অফিসার ছাড়াও সকল উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এবং বিভাগীয় জেলার শহর সমাজসেবা অফিসারগণ প্রবেশন অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত কোন ব্যক্তি এবং আইনের সাথে সংঘর্ষে আসা কোন শিশুকে কারাগারে না রেখে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে তার পরিবার ও সামাজিক পরিবেশে রেখে কৃত অপরাধের সংশোধন ও তাকে সামাজিকভাবে একীভূতকরণের সুযোগ দেয়ার প্রক্রিয়া হচ্ছে ‘প্রবেশন’। এটি একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক সংশোধনীমূলক কার্যক্রম। এটি অপরাধীর বিশৃঙ্খল ও বেআইনি আচরণ সংশোধনের জন্য একটি সুনিয়ন্ত্রিত কর্মপদ্ধতি। এখানে পুনঃঅপরাধ রোধ ও অপরাধীকে একজন আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার জন্য সহায়তা করা হয়।
‘প্রবেশন আদেশ’ বলতে প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিনেন্স, ১৯৬০ (এ্যাক্ট ১৯৬৪) এর ধারা ৫ অথবা শিশু আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) এর ধারা ৩৪ উপধারা (৬) এর অধীন কোনো ‘প্রবেশন আদেশ’কে বোঝাবে। বিজ্ঞ আদালত অপরাধের প্রকৃতি, অপরাধীর চরিত্র, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা এবং অপরাধ সংঘটনে তার সংশ্লিষ্টতা বিবেচনা করে প্রবেশন আদেশ প্রদান করে থাকেন।
প্রবেশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
- প্রবেশনারকে আত্মশুদ্ধি করতে সুযোগ দেওয়া ও সাহায্য করা ;
- সামাজিক ও মনস্তাত্বিক চিকিৎসার মাধ্যমে অর্থাৎ অপরাধের মূল কারণসমূহ নির্ণয়পূর্বক প্রবেশনারের সংশোধনের ব্যবস্থা করা;
- চারিত্রিক সংশোধনের মাধ্যমে পুনঃঅপরাধ রোধ করতে সহায়তা করা;
- প্রবেশনারকে শৃঙ্খল জীবনযাপনে সহায়তা করা;
- মোটিভেশন, কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে অপরাধ সম্পর্কে প্রবেশনারকে সচেতন করে তাকে অপরাধ হতে দূরে রাখা;
- একজন আইনমান্যকারী নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করা;
- প্রবেশনারের পিতা-মাতা এবং অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের মন হতে বিরূপ মনোভাব দূর করে প্রবেশনারের প্রতি সমানুভূতিশীল করে তোলা;
- সামান্যতম ভুলের জন্য অপরাধীকে ‘দাগী আসামী’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার হাত হতে রক্ষা করা;
- সমাজে উৎপাদনশীল ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ দান করা;
- সংশোধনের পর প্রবেশনারকে সমাজে পুনঃএকীকরণ;
- সমাজে অপরাধের সংখ্যা উত্তরোত্তর কমিয়ে আনা;
প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিনেন্স, ১৯৬০ (এ্যাক্ট ১৯৬৪) এর আলোকে প্রদেয় সেবা:
- প্রবেশন আদেশ অনুযায়ী প্রবেশনারকে আদেশে বর্ণিত শর্তাবলী সম্পর্কে অবগত করা।
- আদেশে বর্ণিত শর্তাবলী পালনে প্রবেশনার ও তার পরিবারের সদস্যদের উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান।
- নিয়মিত মোটিভেশন, কাউন্সেলিং ও ফলোআপের মাধ্যমে অপরাধ সম্পর্কে প্রবেশনারকে সচেতন করা এবং চারিত্রিক সংশোধনের মাধ্যমে পুনঃঅপরাধ রোধে সহায়তা করা।
- প্রবেশনারকে শৃঙ্খল জীবনযাপন এবং আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করা।
- সংশোধনের পর প্রবেশনারকে উৎপাদনশীল ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ।
- প্রবেশন মেয়াদ শেষে অব্যাহতি প্রাপ্ত প্রবেশনারকে সমাজে পুনঃএকীকরণের লক্ষ্যে পুনর্বাসনমূলক কার্যক্রমের আওতায় আনা ও নিয়মিত ফলোআপ করা।
শিশু আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) এর আলোকে প্রদেয় সেবা
- আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশুদের জন্য থানা কিংবা শিশু আদালত থেকে অনানুষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাসমূহ যেমন: থানা থেকে মুক্তি, বিকল্প পন্থা, জামিন প্রদানে আইন অনুযায়ী কিংবা আদালতের নির্দেশে ব্যবস্থা গ্রহণ;
- আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু বা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিকল্প পরিচর্যা ও সেবা;
- প্রাতিষ্ঠানিক পরিচর্যা ব্যবস্থাকে সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা এবং তা স্বল্পতম সময়ের জন্য।
আফটারকেয়ার সার্ভিস
কারাগার থেকে মুক্ত ব্যক্তি, প্রবেশনে মুক্তি ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং কারাগারে আটক সাজাপ্রাপ্ত নারীদের সমাজে পুনঃএকীকরণের লক্ষ্যে ‘অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি’র মাধ্যমে আফটার কেয়ার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
আফটারকেয়ার সার্ভিসের উদ্দেশ্য
- কারাগার অভ্যন্তরে বয়স্ক শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে অপরাধের কুফল সম্পর্কে সচেতন ও অপরাধবিমুখ করা;
- খেলাধুলা ও বিনোদনমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষ সাধন করা;
- কাউন্সেলিং ও মোটিভেশনের মাধ্যমে অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করা;
- প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল ও উপার্জনক্ষম করে গড়ে তোলা;
- এককালীন আর্থিক ঋণ কিংবা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন করা;
- সমাজে পুনঃএকীকরণ।
আফটারকেয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রদেয় সেবা
- কারাগার অভ্যন্তরে কয়েদীদের জন্য বয়স্ক শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা;
- খেলাধুলা ও বিনোদনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা;
- কারাগার অভ্যন্তরে কয়েদীদের জন্য কুটির শিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;
- কাউন্সেলিং ও মোটিভেশনাল বৈঠক আয়োজন করা;
- কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা;
- প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন প্রকার কাজে নিয়োজিত করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ;
- কয়েদীদের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সংযোগ স্থাপন করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যবস্থা করা;
- প্রয়োজনবোধে কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে এককালীন আর্থিক ঋণ দিয়ে তাদের স্থায়ী আয়ের পথ প্রশস্ত করে দেয়া;
- কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সমাজসেবা অধিদফতরের বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ইত্যাদি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা;
- অপরাধীদের কল্যাণ সাধনের জন্য বিভিন্ন বিভাগ বা অফিসের মধ্যে সংযোগ সাধন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
- আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুন যে সকল অপরাধী আদালতে জামিন লাভ বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হতে বঞ্চিত হচ্ছে প্রয়োজনবোধে তাদেরকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা;
সেবাদান পদ্ধতি
প্রবেশনের ক্ষেত্রে
- বিজ্ঞ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী কর্তৃক প্রবেশনের জন্য আবেদন;
- বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক আবেদন গ্রহণ এবং প্রবেশন অফিসারকে অপরাধী সম্পর্কে প্রাকদন্ডাদেশ প্রতিবেদন প্রদানের আদেশ;
- প্রবেশন অফিসার কর্তৃক প্রাকদন্ডাদেশ প্রতিবেদন দাখিল;
- বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক প্রবেশন মঞ্জুর (অপরাধী কর্তৃক বন্ড সহি প্রদান সাপেক্ষে) এবং প্রবেশন অফিসারের তত্তাবধানে সমর্পণ;
- প্রবেশন মেয়াদে অপরাধীকে কাউন্সেলিং, মনিটরিংসহ তার উন্নয়নের বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা ও প্রয়োজনে কর্মসংস্থানের জন্য সার্বিক সহায়তা প্রদান;
- প্রবেশন অফিসার কর্তৃক নিয়মিত আদালতে প্রতিবেদন দাখিল;
- প্রবেশন মেয়াদান্তে প্রবেশন অফিসারের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কর্তৃক মামলা হতে অব্যাহতি ও প্রবেশনারকে মুক্তি প্রদান অথবা মামলা হতে অব্যাহতি না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ;
- মুক্তিপ্রাপ্ত প্রবেশনারের সামাজিক পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে ঋণদানের ব্যবস্থা গ্রহণ।
বিকল্প পন্থার ক্ষেত্রে
- আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু থানায় আসলে শিশু বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় তার সাক্ষাৎকার গ্রহণ;
- শিশুর শিক্ষা, বয়স, পেশা, পরিবার বিবেচনায় বিকল্পপন্থার জন্য শিশু বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক প্রবেশন কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ;
- শিশুর পরিবার ও অভিযোগকারীর উপস্থিতিতে পারিবারিক সম্মেলনের আয়োজন;
- সম্মেলন সফল হলে ডাইভারশন প্রদান, সম্মেলন ফলপ্রসু না হলে মামলার জন্য পুনরায় থানায় প্রেরণ;
- ডাইভারশন প্রাপ্ত শিশুর নিয়মিত ফলোআপ, শিশু ও তার পরিবারকে কাউন্সেলিং;
- ডাইভারশন মেয়াদ শেষে শিশু বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা বা শিশু আদালতে প্রতিবেদন দাখিল।
বিকল্প পরিচর্যার ক্ষেত্রে
- কোন সুবিধা বঞ্চিত শিশু এবং আইনে সংস্পর্শে আসা শিশু থানায় শিশু বিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক নথিভুক্ত হলে তাকে থানা থেকে গ্রহণ করা;
- শিশু আইন ২০১৩ এর ধারা-৮৯ মোতাবেক সুবিধাবঞ্চিত শিশু চিহ্নিত করা ও তাকে মানসিক সাপোর্ট প্রদান করা;
- শিশুর সার্বিক এসেসমেন্ট করা ও তাকে শিশু আইন ২০১৩ এর ৮৫ ধারার যেকোন প্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে রাখা;
- শিশু কল্যাণবোর্ডকে অবহিত করা এবং শিশুর ঠিকানার সন্ধান করা;
- অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া গেলে তাকে পরিবারের নিকট পুনঃএকীকরণের জন্য প্রেরণ করা;
- অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া না গেলে শিশুকল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিকল্প পরিচর্যা নিশ্চিত করণে শিশুকে উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ।
আফটারকেয়ারের ক্ষেত্রে
- প্রবেশন অফিসার কর্তৃক সাজার মেয়াদ অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় নিয়মিত কয়েদীদের হালনাগাদ তালিকা প্রস্তুত ও সংরক্ষণ;
- হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় কয়েদীদের উপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ট্রেড চালুকরণ;
- অপরাধ প্রবণতা হ্রাসে নিয়মিত কারাকর্তৃপক্ষ সহযোগে মোটিভেশনাল সভা আয়োজন;
- অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি কর্তৃক অনুমোদন সাপেক্ষে কারামুক্ত ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অথবা কর্মসংস্থান উপযোগী উপকরণ প্রদান করা;
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় সহায়তা পাওয়ার আবেদন পত্র সুপারিশসহ উপজেলা/শহর সমাজসেবা অফিসারের নিকট প্রেরণ;
- উপজেলা/শহর সমাজসেবা অফিস কর্তৃক সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের আওতায় সহায়তা প্রদান;
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা প্রাপ্তিতে সহায়তা দান;
- কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি, প্রবেশনে মুক্তি ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং কারাগারে আটক সাজাপ্রাপ্ত নারীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের নিমিত্ত বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ও সমিতির ফান্ড সংগ্রহ;
সেবাদান কেন্দ্র
- প্রবেশন অফিসারের কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট জেলা
- প্রবেশন অফিসারের কার্যালয়, সিএমএম কোর্ট,
- উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় (সকল উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, প্রবেশন অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত)
- বিভাগীয় জেলার শহর সমাজসেবা কার্যালয়সমূহ (প্রবেশন অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত)
কার্যক্রম বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টগণ
১. সদর দপ্তর পর্যায়ে :
- পরিচালক (কার্যক্রম)- ১ জন
- অতিরিক্ত পরিচালক (কার্যক্রম-১) - ১ জন
- উপপরিচালক (চিকিৎসা ও প্রবেশন)- ১ জন
- সহকারী পরিচালক (প্রবেশন) - ১ জন
২. মাঠ পর্যায়ে:
- বিভাগীয় পরিচালক- ৮ জন।
- উপপরিচালক (সকল জেলা )- ৬৪ জন
- প্রবেশন অফিসার (৬৪টি জেলা ও ০৬ টি সিএমএম কোর্ট) : ৭০ জন।
- প্রবেশন অফিসার (উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, দায়িত্বপ্রাপ্ত) - ৪৯২ জন।
- বিভাগীয় জেলার শহর সমাজসেবা অফিসারগণ (দায়িত্বপ্রাপ্ত)- ১৯জন
সেবাগ্রহিতা
- প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিনেন্স, ১৯৬০ অনুযায়ী প্রবেশন আদেশপ্রাপ্ত প্রবেশনার;
- কারাগার অভ্যন্তরে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী;
- শিশু আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু বা আইনের সাথে সংঘর্ষে জড়িত শিশু;
- শিশু আইন ২০১৩(সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী সুবিধাবঞ্চিত শিশু;
- কারাগারে আটক সাজাপ্রাপ্ত নারীদের বিশেষ সুবিধা আইন ২০০৬ অনুযায়ী বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তির যোগ্য সাজাপ্রাপ্ত নারী।
সেবা প্রদানের সময়সীমা
- আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমা
- সংশ্লিষ্ট আইনসমূহে নির্ধারিত সময়সীমা
- অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতি কর্তৃক অনুমোদন প্রাপ্তির ১০ কর্মদিবসের মধ্যে।
প্রয়োজনীয় ফি/ ট্রাক্স/ আনুষাঙ্গিক খরচ:
নির্দিষ্ট সেবা পেতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী প্রতিকারকারী কর্মকর্তা
বিভাগের ক্ষেত্রে
- বিভাগীয় পরিচালক (সংশ্লিষ্ট বিভাগ)
জেলার ক্ষেত্রে
- উপপরিচালক (সংশ্লিষ্ট জেলা )
সংশ্লিষ্ট আইন/বিধি/ নীতিমালা
১. প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিনেন্স, ১৯৬০ (এ্যাক্ট ১৯৬৪) ও প্রবেশন অব অফেন্ডার্স রুলস, ১৯৭১
২. শিশু আইন, ২০১৩(সংশোধিত ২০১৮)
৩. কারাগারে আটক সাজাপ্রাপ্ত নারীদের বিশেষ সুবিধা আইন, ২০০৬ ও বিধিমালা ২০২০
নাগরিকদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্র
- কার্যক্রম পরিচালনায় কোন ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা;
- কয়েদীদের শিক্ষা, বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানে সহায়তা;
- অপরাধী সংশোধন ও পুনর্বাসন সমিতিতে যাকাত, দান, অনুদান ইত্যাদি আর্থিক সাহায্য প্রদান;
- মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদী/ প্রবেশনারদের কর্মসংস্থানে সহায়তা;
- মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদী/ প্রবেশনারদের আত্মীয়-স্বজনকে খুঁজে বের করায় সহায়তা;
- মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদী/ প্রবেশনারদের সমাজে পুনর্বাসনে সহায়তা ইত্যাদি।
সেবা প্রদানের পরিসংখ্যান:
সেবা প্রদানকারী কার্যালয়
|
:
|
জুলাই ২০২২ হতে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত উপকারভোগীর সংখ্যা
|
৬৪ জেলায় মোট ৭০ টি জেলা পর্যায়ের প্রবেশন অফিসারের কার্যালয়সহ সিটি কর্পোরেশনভুক্ত শহর সমাজসেবা কার্যালয়সমূহ ও সকল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়।
|
মঞ্জুরকৃত প্রবেশনারের সংখ্যা
|
ডাইভারশন প্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা
|
পুনর্বাসন
|
মোট সেবাগ্রহীতার সংখ্যা
|
২,৮৫৮ জন
|
৫২১ জন
|
২,৮৬০ জন
|
৬,২৩৯ জন
|